আসসালামু আলাইকুম আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজকে আমি আলোচনা করব ওজন কমাবেন কিভাবে। অনেকেই আছেন ওজন কমাতে চান কিন্তু শুরু করবেন কিভাবে বুঝতেছেন না তাদের জন্য আজকে আমার এই আলোচনা। আশা করি আপনারা এই আলোচনা তে অনেকেই উপকৃত হবেন।
প্রথমেই আপনাদের শর্করা জাতীয় খাবার জানতে হবে। শর্করা জাতীয় খাবার আগে চিনতে হবে। আমাদের শর্করা জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। তার কারন হচ্ছে আমরা যদি শর্করা জাতীয় খাবার খাই এগুলা আমাদের শরীরে ইনসুলিনের প্রয়োজনীয়তা আছে কারণ সেগুলা চিনি হিসেবে রক্তে আসে। চিনি আসার কারনে সেটাকে কোষের ভিতরে ঢুকানোর জন্য আমাদের ইন্সুলিনের প্রয়োজনীয়তা আছে , এই ইন্সুলিনের সাহায্যে এই চিনি গুলা কোষের ভিতরে ঢুকে তারপরে শক্তি বা ATP (Adenine Triphosphate) উতপণ্য হয়। তারপরে যেটা বাকি থাকে সেটা Glycogen হিসেবে থাকে এরপরে যেটা আর বাকি থাকে সেটা চর্বি হিসেবে জমা হয়।
মূল যে সমস্যা সেটা হলো ইনসুলিন , ইনসুলিনের পরিমাণ যদি শরীরে বেশি থাকে তখন চর্বি গলার যে বিষয়টা, ইনসুলিন একটা এনাবলিক হরমোন এর কাজ হলো গড়া এবং গঠন করা। এর কারনে আমাদের শর্করা জাতীয় খাবার গুলা চিনতে হবে। শর্করা খাবার খেলে ইনসুলিন টা বেশি আসে। তাহলে আসুন আমরা জেনে নেই শর্করা খাবার গুলো কি কি…
Contents
শর্করা খাবার গুলো কি কি?
১। ভাত, রুটি, আলু, এরকম শস্য জাতীয় যে খাবার গুলো আছে যেমন গম ভুট্টা এগুলা থেকে তৈরি যা আছে এগুলা খেলে চিনি আসে।
২। মিষ্টি জাতীয় যত রকম মিষ্টি আছে পৃথিবীতে সব।
৩। দুধ- দুধের ভিতরেও চিনি আছে, অনেকেই ভাবতেছেন দুধ খাবো নাকি? না বিশেষ করে যারা ওজন কমাতে চান তারা দুধ খাবেন না কার্বন দুধেও চিনি আছে। আর তাছাড়া একটা বাজে প্রোটিন আছে কেছিন নামে একটা প্রোটিন আছে অনেক সময় আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
৪। ফল জাতীয় খাবার বিশেষ করে কলা, খেজুর, আঙ্গুর… ফল হচ্ছে শর্করা জাতীয় খাবার তাই প্রাথমিকভাবে যারা ওজন কমাতে চান তারা ফল খাবেন না তবে নিয়ন্ত্রণ করে খেতে পারবেন। ওজন কমার পরে আপনারা ফল খেতে পারেন।
৫। চিড়া, মুড়ি, গুড়, সন্দেশ যত রকম ফল আছে ভাত, রুটি, আলু, মুড়ি, খই যা যা আছে এগুলো সবই শর্করা জাতীয় খাবার। এমনকি আটা জাতীয় খাবার চালের গুড়া, বিস্কুট ইত্যাদি শর্করা জাতীয় খাবর এগুলা প্রাথমিকভাবে বন্ধ করতে হবে।
কি কি খাবেন?
শাক সবজি খাবেন, শুধু শাক সবজি খাবেন তা না, বিশেষ করে যারা ওজন কমাতে চান তারা কম শর্করা জাতীয় সবুজ শাক সবজি খাবেন। খাবার বেশি বেশি করে চিবিয়ে খাবেন। লাল শাক, গাজর ও খেতে পারেন তবে গাজরের এর পরিমাণ একটু কম খাবেন। তবে শসা টম্যাটো খেতে পারেন। তাহলে এই খাবার গুলা খাবেন আর অন্য সব শর্করা জাতীয় খাবার বাদ দিবেন।
কিভাবে প্রোটিন খাবেন?
এখন আমি কথা বলবো প্রোটিন নিয়ে, যারা প্রাথমিক ভাবে ওজন কমানো শুরু করবেন তারা ডিমের সাদা অংশ সহ কুসুম সহ ডিমের সাদা অংশ প্রোটিন আর কুসুম হচ্ছে গুড ফ্যাট, এটা যদি মাখন বা ঘি দিয়ে ভাজলে কম ইনসুলিন আসে। প্রোটিনের সাথে ফ্যাট মিশিয়ে খেলে ইনসুলিন কম আসে।
মাছে ও প্রোটিন থাকে ভালো প্রোটিন থাকে আর চর্বি যুক্ত মাছে থাকে ভালো ফ্যাট। যে কোন ধরনের মাছ সামুদ্রিক দেশী সব ধরনের মাছ খেতে পারেন।
আমরা ভাত রুটির পরিবর্তে শাক সবজি খাচ্ছি আর ভালো ফ্যাট হিসেবে ডিমের কুসুম মাছের তেল মাখন ঘি জলপাই এর তেল এগুলা খাবেন। প্রিজার্ভ ফুড, ফাস্ট ফুড, বাজারে প্যাকেট জাতীয় যত রকম খাবার আছে সব কমিয়ে দিতে হবে। আর চিনি জাতীয় যত রকম খাবার আছে সব খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ভালো একটা প্রোটিন এবং ফ্যাটের উৎস হলো বাদাম। এইভাবে খেলে আর ক্যালরির হিসাব করতে হবে না। এই খাবার গুলার মধ্যেই যখন আপনি সীমিত থাকবেন অন্য খাবার যখন আর খাবেন না তখন শরীরে জমা থাকা চর্বি গুলা শরীরে শক্তি যোগান দিবে তখন ওজন কমতে থাকবে।
প্রথম ৭ দিন শরীর একটু খারাপ লাগবে তাই ৪-৫ দিন পরে পানিতে লবণ মিশিয়ে খাবেন, প্রতিদিন একটা কচি ডাব খাবেন। তাহলে শরীরের পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ হবে। অনেকের প্রাথমিক ভাবে মাথা ঘুরায় মাথা ঝিমঝিম করে এই রকম খারাপ লাগে মাথা ব্যাথা করলে পানিতে একটু লবণ মিশিয়ে খাবেন।
কি নিয়মে খাবেন?
প্রাথমিক অবস্থায় আপনারা পেট ভরে ভরে খাবেন, শুধু চেষ্টা করবেন সকালের খাবার একটু দেরিতে খাবেন আর রাতের খাবার একটু আগে খাবেন। ক্যালরির হিসাবের দরকার নাই পেট ভরে ভরে খাবেন তবে চেষ্টা করবেন সকালের খাবার একটু দেরিতে খেতে আর রাতের খাবার একটু তাড়াতাড়ি খেতে। দুইটা মিলে প্রাথমিক ভাবে সকালের খাবার সকাল ১১ টা ১২ টার সময় খাবেন আর সন্ধ্যা ৬ টা ৭ টার সময় খাবেন। ১ সপ্তাহ পর দেখবেন আপনার আর তেমন কোন খুদা লাগতেছে না তখন থেকে রোজা রাখা শুরু করবেন।
রোজা রাখার নিয়ম
রোজা প্রথম সপ্তাহে রাখার দরকার নাই ৭ দিন পরে ১ বেলা খেয়ে রোজা থাকবেন অর্থাৎ ইফতারের সময় কচি ডাব খাবেন, ব্ল্যাক কফি খাবেন, গ্রীন টি খাবেন সাথে মাছ, ডিম, বাদাম, মাখন, ঘি, শাক সবজি ১ থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে খাওয়া শেষ করবেন আর পানিতে একটু পানিতে লবণ মিশিয়ে খাবেন।
ঘুমের নিয়ম
রাত ১০ টার সময় ঘুমিয়ে পড়বেন কারন ১০ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত ভালো ঘুম হয় , তারপর সেহরি খাবেন সেহরিতে শুধু পানিতে লবণ মিশিয়ে খাবেন।এইভাবে ১ বেলা খেয়ে ৭ দিন রোজা থাকবেন ২ দিন রোজা থাকবেন না । এইভাবে রোজা রাখা শুরু করলে আপনার ওজন কমতে শুরু করবে। আপনাকে দেখতে সুন্দর লাগবে ইনারজেটিক লাগবে। অনেকেই আছে না খেয়ে থাকার ফোলে শরীর দুর্বল লাগবে তাই রোজা রাখার জন্য তখন আর দুর্বল লাগবে না।
ব্যায়াম করবেন কিভাবে
সকালে ফজরের নামায পড়ে হাঁটতে বের হবেন কারন সকালের সূর্যের আলো শরীরে লাগানো অনেক গূরুত্বপূর্ন এটা আপনার স্লিপ সাইকেল কে ইমপ্রোভ করে, এর পরে সকালের বাতাস, প্রাকৃতিক সুন্দর্য দেখার যে মানসিক প্রশান্তি দেয় সেটা আপনাকে সারা দিনের জন্যে শরীর চাঙ্গা রাখে। প্রাথমিক ভাবে সকালে হাঁটা আর যারা হাটে তারা জগিং করবেন লক্ষ্য রাখবেন হার্ট রেট ঠিক রেখে ব্যায়াম করবেন। yoga ব্যায়াম করবেন muscle building ব্যায়াম করবেন যারা gym করেন তারা নিয়মিত জিম করবেন। প্রতিদিন জিম করার দরকার নাই একদিন পর পর ব্যায়াম করবেন তাহলে muscle building করবে।
আর যারা দৌড়ান তারা তারা প্রতিদিন দৌড়াবেন না একদিন দৌড়াবেন পরের দিন সাইক্লিং করবেন তারপরের দিন সাঁতার কাটবেন। প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটবেন আর Yoga প্রতিদিনই করতে পারবেন। এইভাবে ব্যায়াম করলে ইনশাল্লাহ আপনার ওজন কমে যাবে।
হার্ট রেট মাপার পদ্ধতি
হার্ট রেট মাপার পদ্ধতি ১৮০ থেকে আপনার বয়স বাদ দিবেন ( ১৮০- আপনার বয়স ) ১৮০ থেকে আপনার বয়স বাদ দিলে যা আসবে তার উপর আপনার হার্ট রেট উঠবে না।
আমাদের আরও পোস্ট পড়তে ক্লিক করুনঃ জেনে নিন আপনার আদর্শ ওজন কত হওয়া উচিত
মানসিক প্রশান্তি
আর সব থেকে বড় কথা হল কোন স্ট্রেস নেওয়া যাবে না সব সময় রিলাক্স থাকতে হব। অনেকেই আছে অনেক টেনশন করে, এটা করবেন না কারন সবার BMR এক রকম নয় সবার ডায়াট এক রকম না তাই আপনার ডায়াট আপনি নিজে তৈরি করবেন। আপনার শরীরের চাহিদা অনুযায়ী আপনি খাবেন সুতরাং আপনার ডায়াট আপনি বুঝে করবেন।
তাই আপনি ভালো অভ্যাস গুলো ধরে রাখবেন ভালো ঘুমের অভ্যাস হাঁটার অভ্যাস ভালো জিনিস স্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছেন বাজে খাবার গুলা খাচ্ছেন চিনি খাচ্ছেন না সকল বাজে বাজে খাবার বাদ দিয়ে ভালো ভালো খাবার খাচ্ছেন ঘুমাচ্ছেন দুশ্চিন্তা করতেছেন না মানসিক প্রশান্তি পাচ্ছেন। সকল রকম মানসিক প্রশান্তি আপনার খুবী দরকার কারন একটু মানসিক অশান্তি আপনার পুরো হরমনাল চেঞ্জ করে দেয়।
আরও পড়ুনঃ ওজন কমানোর সহজ উপায়
তো আশা করি সবাই এই নিয়মে চললে ইনশাল্লাহ সবাই ওজন কমাতে সক্ষম হবেন। আমার পোস্ট পড়ে কেউ যদি উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আর এই রকম আরও পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
ami amar weight komano suru koresi… thanks for your information
you are welcome
Nice information
thanks
Apnar tips sune ami ozon komano suru kore diyesi
thank you
try koren.. inshallah ojon kome jabe